Decluttering- জিনিসপত্র গোছগাছ করার কিছু উপায় (Part-3)

SKILLS

8/16/20251 min read

অপ্রয়োজনীয় ও অনুপকারী চিন্তার অপসারণ

দেখুন, যদি আপনার রান্নাঘরে তাকের ওপরে থরে থরে অপ্রয়োজনীয় থালা-বাসন, হাঁড়ি-পাতিল সাজানো থাকে, হরেক রকম জিনিসপত্রের ভিড়ে কিচেন টপের ওপরে একটা প্লেট রাখার মতো জায়গাও না থাকে, তাহলে আপনি জাহান্নামে যাবেন না। কিন্তু আপনার চিন্তায় যদি গীবত, পরশ্রীকাতরতা, অনর্থক চিন্তা, কুধারণা ইত্যাদি থাকে তাহলে এসবের পরিণতি কী, আপনি নিশ্চয়ই ভালো জানেন।

ডিক্লাটারিং শুধু ঘরবাড়ি, ফার্নিচার এসবের ক্ষেত্রেই নয়; বরং সবচেয়ে বড় ডিক্লাটারিং হলো চিন্তা-চেতনায়।

আপনি কি কখনো অনুভব করে দেখেছেন, আপনার চিন্তার মধ্যে অপ্রয়োজনীয় কোনো কিছু থাকছে কি না? এমন কিছু কি আপনার চিন্তার মধ্যে আছে, যার কারণে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন? আপনি কি শুধু আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়েই চিন্তা করেন?

ঘরের মধ্যে যে জিনিসগুলো আমার উপকারে আসে না সেগুলো যেমন আমি ছুড়ে ফেলব, ঠিক তেমনই আমার চিন্তার মধ্যেও যে চিন্তাগুলো আমার উপকারে আসবে না সেগুলোকে আমি অবশ্যই ছুড়ে ফেলব। এ ক্ষেত্রে একটা কার্যকর উপায় হলো, আমার যাবতীয় চিন্তাগুলোকে আমি লিখে ফেলতে পারি। এরপর নিজেই নিজের বিচারক হয়ে বিচার করতে পারি, কোন চিন্তাগুলো আমি রাখব আর কোনগুলো বাদ দেবো।

আমার চিন্তা-ভাবনাগুলো কেমন হওয়া দরকার আর আমি কী ধরনের চিন্তা-ভাবনা করছি—এ বিষয়ে অবশ্যই আমার একটা নিয়ন্ত্রণ থাকা চাই। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা “আমি যা নিয়ে চিন্তা করছি সেটা কি আমার চিন্তার বিষয়?” চ্যাপ্টারে পাবেন।

অভ্যাসে পরিণত করা

যেকোনো ধরনের পার্সোনাল ট্রান্সফর্মেশনের ক্ষেত্রে কার্যকরী একটি উপায় হলো, নতুন নির্দিষ্ট যে জিনিসটা আমি শিখতে চাই বা আমার জীবনে আনতে চাই, সেটাকে অভ্যাসে পরিণত করে নেওয়া।

আমরা অন্যের ভিডিও দেখে, অন্যের অডিও রেকর্ডিং শুনে কত সময় ব্যয় করি, তাই না? এখন আপনি যদি নিজের পরিকল্পনার একটা রেকর্ডিং করেন, তাহলে কেমন হয় ব্যাপারটা? ঘণ্টায় ঘণ্টায় আপনিই সেটা শুনলেন, আপনার কথার রেকর্ডিংই আপনাকে মোটিভেট করল আরকি।

দেখুন, যুগের পর যুগ ধরে বিজ্ঞাপনই কিন্তু সমস্ত বিজনেসকে রান করায়। একেকটা ইন্ডাস্ট্রি বিজ্ঞাপনের কারণেই চলে। বিজ্ঞাপনগুলোতে কী হয়? সেই ছোট ভিডিও বা অডিওগুলো আমাদেরকে আমাদের প্রয়োজনের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই জিনিসটা কিনলে আমার কত সুবিধা হবে, কত কষ্ট থেকে আমি বেঁচে যাব—এগুলো বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়, ঠিক কি না? বিজ্ঞাপন দেখে দশজনের দুইজন কিন্তু কিনেই। বিষয়টা কাজ করে।

দেখুন, আল্লাহ তাআলা সূরা মাআরিজের মধ্যে বলেছেন, আমাদেরকে লঘুচিত্তের অধিকারী করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা পরিকল্পনা করব, ভুলে যাব, মন থেকে হারিয়ে যাবে—এটাই স্বাভাবিক। আমি যেন ভুলে না যায় আমার পরিকল্পনার খসড়া, সে জন্য আমাকেই উপায় বের করতে হবে। স্মরণ করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। আপনার নিজের কণ্ঠের সেই রেকর্ডিংই হবে আপনার পরিকল্পনার রিমাইন্ডার। এটা অনেকটা বিজ্ঞাপনের মতোই কাজ করবে।

আপনিও ঠিক এই কাজটাই করতে পারেন। নিজের পরিকল্পনা, নিজের আকাঙ্ক্ষার সাথে যায় এমন একটা পডকাস্ট তৈরি করে নিজেই সেটা শুনতে পারেন। নিজের যাবতীয় প্ল্যানিংয়ের ভিডিও নিজেই দেখতে পারেন, নিজের যাবতীয় স্বপ্নের অডিও নিজেই শুনতে পারেন।

মুহুর্মুহু পরিকল্পনার এই বিজ্ঞাপন যেমন করণীয় কাজটাকে স্পেসিফিক হ্যাবিটে পরিণত করতে সাহায্য করবে, তেমনই আপনার ব্রেইনকে ডিক্লাটার করতেও সাহায্য করবে।

এর জন্য আপনাকে কোনো স্টুডিও বানাতে হবে না, নতুন করে কোনো সাউন্ড সিস্টেম জোগাড় করতে হবে না; শুধু আপনার হাতের সেলফোনই যথেষ্ট। আপনি একটা ১০ সেকেন্ডের রেকর্ডিং করে সেটা ২ ঘণ্টা পরপর শুনতে পারেন।

যেমন, আপনি রেকর্ডিং করতে পারেন : ঘুম থেকে উঠে সাথে সাথে আমি আমার বিছানা গুছিয়ে রাখব, জিনিসপত্র রাখার সময় নির্দিষ্ট জায়গাতেই রাখব, আজকে কোনো জিনিস এলোমেলো ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখব না, আজকে আমার চিন্তায় অন্যের প্রতি কোনো ধরনের পরশ্রীকাতরতা রাখব না ইত্যাদি—এ রকম বিভিন্ন ধরনের অভ্যাস, যেটা আপনি আপনার মধ্যে আনতে চান।

এটাকে বলা হয়, Self Speak Programming Audio। প্রথমদিকে নিজের ভয়েস শুনতে আপনার খুব একটা ভালো না-ও লাগতে পারে, এটা ব্যাপার না। প্রথমদিকে একটু কেমন কেমন লাগলেও পরে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। It serves a purpose, it helps you to communicate with yourself.

আবার মনে করলেন, এই বিজ্ঞাপন তৈরি করার জন্য ডিভাইস ইউজ করবেন না। তাহলে আরেকটা উপায় হতে পারে To-Do List। প্রতিদিনের লিস্টে আপনি এ বিষয়টি উল্লেখ করতে পারেন।

উল্লেখ থাকে, To-Do List নিয়ে বিস্তারিত “ইস্তেকামাতের জাদু” চ্যাপ্টারে পাবেন।

অব্যবহৃত জিনিসকে ব্যবহার-উপযোগী করা

অব্যবহৃত জিনিসকে আর কতদিন আগলে রাখবেন?এটা মনে হয় আমাদের দেশের একটা নিয়ম হয়ে গেছে যে, বিয়ের সময় যেসব ভারী ভারী গহনা পাওয়া যাবে সেগুলোকে বছরের পর বছর যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখতে হবে। গহনা সিন্দুকে রেখে দেওয়াটা যেন একটা ক্রেডিট। আমি মাঝে মাঝেই অনেকজনকে বলতে শুনি, বিয়ের গহনা একটাও রাখোনি! আমি আমার শাশুড়ির দেওয়া চুড়ি এখনো যত্ন করে রেখে দিয়েছি।

গহনা রেখে দিয়ে লাভ কী? আমি যদি ব্যবহার করতেই না পারি, বছরের পর বছর সিন্দুকে রেখে দিয়ে কী ফায়দা?

ছোটখাটো, হালকা-পাতলা গহনা সবসময় ব্যবহার করা যায়, কিন্তু ভারী ভারী গহনা বছরে ১-২ বার, কী! তাও না! এর জন্য এত আগলে রাখতে হবে?

শুধু গহনা না, ধরুন কেউ আপনাকে একটা দামি ফুড প্রসেসর গিফ্‌ট করেছে, কিন্তু সেটা আপনার খুব একটা কাজে লাগে না। আপনি সেটাকে কিচেন টপের ওপর রেখে দিয়েছেন; নিয়মিত পরিষ্কার করেন। সেটা আপনার সময় অপচয় করছে, জায়গা দখল করছে—এ নিয়ে আপনি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ভাবছেন, এত দামি একটা জিনিস বাদ দিয়ে দেবো! যদি পাঁচ বছর পর আমার কাজে লাগে!

ধরুন, আপনার বাসায় একটা পুরাতন দিনের ড্রেসিং টেবিল আছে। এখন একেবারে ভাঙাচোরা অবস্থা। বাদ দিতে পারছেন না, কারণ বিয়ের সময় আপনার ভাই আপনাকে এটা উপহার দিয়েছিল।

ধরুন, আপনার বাসায় টেবিল আছে যেটাতে আপনার মা পড়ালেখা করেছেন। এখন সেটা ব্যবহার-উপযোগী নেই। আপনি স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন।

অতীত-স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে যদি আপনার এতটা ইচ্ছা থাকে, তবে আপনার বাসার একটা জায়গাকে মিউজিয়াম বানিয়ে নিতে পারেন। এই রুমটা আপনার অতীত-স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখার জায়গা। আপনার বাসা যদি বড় হয়, তবে বাসার মধ্যে এক পাশে আপনি মিউজিয়াম বানাতেই পারেন। কিন্তু আপনার যদি সে ধরনের জায়গা না থাকে বা বাসা ছোট হয়, তাহলে এত শখ কেন, ভাই?

অব্যবহার্য ও অসুন্দর জিনিস কেন রাখতে চাচ্ছেন? বরং বুদ্ধি খাটিয়ে সেই জিনিসের ব্যবহার-উপযোগিতা কীভাবে বাড়ানো যায় সেই ফিকির করা দরকার।

Decluttering মোবাইল ফোন

অনেকের ফোনেই আপনি দেখতে পাবেন যে, এমন অনেক অ্যাপ্‌স আছে যেগুলো সে মাসে একবারও ব্যবহার করে না। হয়তো প্রয়োজন হবে বা লাগবে ভেবে ইনস্টল করেছিল, কিন্তু পরে তা কাজে লাগেনি। এ ধরনের অ্যাপ্‌সগুলোকে আন-ইনস্টল করে দিতে হবে। যে জিনিসটা আমি শিখতে চাই না, জানতে চাই না বা আমার শেখা-জানার প্রয়োজন নেই, সেই ধরনের ভিডিও বা চ্যানেলগুলোকে বাদ দিয়ে দিতে হবে।

যেমন ধরুন, আমার সেলাই শিখতে ভালো লাগে না বা ভাজাপোড়া বা পিঠার আইটেম ভালো লাগে না। এ ধরনের কোনো কিছুকে আমি আমার ফোনে জায়গা দেবো না। ধরুন, আপনার ইতিহাস সম্পর্কিত ভিডিও দেখতে ভালো লাগে না, খুব একটা উৎসাহ পান না, তাহলে ইতিহাসের ভিডিও চ্যানেলগুলো আপনার ফোনে ডাউনলোড বা সাবস্ক্রাইব করে রাখাটা একটা Clutter। যেগুলো আপনার উপযোগী আপনি সেগুলো নিয়েই থাকার চেষ্টা করবেন।

আবার, আমাদের ফোনে মাঝে মাঝেই junk mail advertisement আসতে থাকে। এগুলো আন-সাবস্ক্রাইব করে দিলে জাংক মেইলগুলো আপনাকে সহসা onslaught করতে পারবে না। অ্যাডগুলোই তো আমাদেরকে মোটিভেট করে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য। তাই না?

এর সাথে সাথে, যে সমস্ত ভিডিও নিজের অবজেক্টিভের সাথে যাবে না, সেগুলোও Playlist-এ না রাখা। সময় নেই, অসময় নেই, মেইল এলেই ইনবক্সে মেইল চেক করতে বসে যাওয়া, মেইলের রিপ্লাই দেওয়া আপনার ব্রেইনকে cluttered করে দিতে পারে। আপনাকে বিভ্রান্ত করতে পারে।

হ্যাঁ, আপনার অফিসিয়াল জরুরি কোনো পারপাস আছে, সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু খুব একটা ইমারজেন্সি না, তাহলে মেইলের রিপ্লাই দেওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিতে পারেন।

আপনার জুতার রেকের কী অবস্থা?

এবার আসুন, ঘরে ঢোকার প্রস্তুতি নিই।

আমাদের দেশীয় কালচারে আমরা জুতা খুলে shoe rack-এ রেখে তারপর ঘরে ঢুকি, তাই না?

জুতার রেকের কী অবস্থা? এখানে কি সব আপনার ব্যবহৃত ও ব্যবহার-উপযোগী জুতাই আছে? নাকি ছেঁড়াফাটা, নষ্ট জুতাও আছে? নাকি একই জুতার অনেকগুলো সেট আছে?

ধরুন, আপনি সকালে হাঁটতে যান। আপনার হাঁটার জুতা এক সেট আর ব্যাক-আপ হিসেবে এক সেট থাকলেই যথেষ্ট। তিন সেট রাখার তো দরকার নেই!

পার্টিতে পরার মতো জুতো দুই সেট থাকলেই চলে, তারপরও কেন আপনার shoe rack-এ অতিরিক্ত সেট থাকে? হ্যাঁ, আপনি মডেল চেঞ্জ করতে ভালোবাসেন, নতুন জুতা কিনতে ভালোবাসেন; ভালো কথা। কিন্তু মডেল চেঞ্জ করার সাথে সাথে পুরাতন মডেলটা আপনি দান করে দিতে পারেন বা সেল করে দিতে পারেন।

আপনার শোবার ঘর

এই ঘর এমন একটা জায়গা, যেখানে আপনি আপনার জীবনের বড় একটা অংশ ব্যয় করেন। এটা শুধুই আপনার ঘর বা আপনার বেডরুম না; আপনার বিশ্রাম নেওয়ার, প্রশান্ত হওয়ার, পুনর্জীবিত হওয়ার, প্রোডাক্টিভ থাকার, আনন্দে থাকার একটা উপলক্ষ।

এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আপনার ডিক্লাটারিংয়ের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন। সুস্বাগত!

আমরা আমাদের জীবন নিয়ে অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখি, জীবন গোছানোর জন্য অনেক প্ল্যান-প্রোগ্রাম করি; কিন্তু ঘুম থেকে উঠে নিজের শোয়ার জায়গাটা, নিজের বিছানাটা গুছাতে আমাদের এতই অলসতা! এতই গাফিলতি!

নিজের বিছানা গুছাতে খুব বেশি হলে এক থেকে দুই মিনিট সময় লাগে। অবাক লাগলেও সত্য, এই দুই মিনিট সময়ই পুরো ঘরবাড়ি, এমনকি নিজের জীবনটাকে গোছানোর জন্যও টোনারের কাজ করে।

হযরত আশরাফ আলী থানভী রহ. বলেন, ‘সর্বপ্রথম ঘরকে চিহ্নিত করো। ঘরের যে সমস্ত জিনিস কাজে আসে তা রেখে দাও, যে সমস্ত জিনিস কাজে আসে না তা বের করে দাও। বিক্রি করে দাও বা মিসকিনদের দান করে দাও। নফল সাদাকা হিসেবে দেওয়ার মনোবল না থাক, যাকাত হিসেবেই দিয়ে দাও।

হয়তো আপনার বেডরুমে অনেক ধরনের জিনিসপত্র আছে। জিনিসপত্রগুলো এলোমেলো, অবিন্যস্ত অবস্থায় এদিক-সেদিক পড়ে আছে। কিন্তু আপনি যদি শুধু আপনার বিছানাটাকে গুছিয়ে ফেলেন, তাহলে কিন্তু বেডরুমের বড় একটা অংশ গোছানো হয়ে গেল।

বিছানার চাদরের রং, ঘরের পর্দার রং, ঘরের দেওয়ালের রং যদি আপনি একটু মানানসই করে রাখেন, তাহলে ঘরটা মোটামুটি অর্গানাইজড হয়ে যায়, সাজানো হয়ে যায়। বিছানায় চাদর বিছানোর সময় চাদরটা গুঁজে রাখলে ভালো হয় নাকি ছড়িয়ে দিলে ভালো হয়, সেদিকটা একটু খেয়াল করতে পারেন। বিছানার চাদরটাকে সবসময় টানটান করে রাখতে পারেন, তাহলে আপনার ঘরটাকে messy দেখাবে না।

আপনি অনেকের খাটের নিচে দেখতে পাবেন, একটা জবরদস্ত স্টোররুম। খাটের নিচে যাবতীয় হাবিজাবি জিনিসপত্র, এই খাটের ওপরে থেকে একটা গভীর রিফ্রেশিং ঘুম দেওয়া কীভাবে সম্ভব?

এ কোনায় কাপড়-চোপড় ঝুলছে, ওই কোনায় কাপড়-চোপড় ঝুলছে, তাহলে আপনার ঘুমের জায়গাটা নিরিবিলি কীভাবে হবে? হ্যাঁ, আপনি বলতে পারেন, এলোমেলো থাকলেও আমার ঘুমের কোনো সমস্যা হয় না, অভ্যাস হয়ে গেছে। ঠিকই, অভ্যাস হয়ে গেছে! যে মুরগির ফার্মে কাজ করে, তার নাকে মুরগির গন্ধ লাগবে না।

হালকা সমস্যা যেটা হয়, সেটা হলো রুচিশীলতা।

আমাদের যার যেমন সামর্থ্য আছে, সেখান থেকে আমরা আমাদের শোবার জায়গাকে নিরিবিলি ও পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি।

আপনি যদি ঘরের সব বিছানা আগে গুছিয়ে ফেলেন, তবে এটা ঘর গোছানোর ক্ষেত্রে মোটিভেশনের মতো কাজ করবে, আপনাকে আশা দেবে। মনে হবে, এই তো আমি অনেকখানি গুছিয়ে ফেলেছি, আর অল্প একটু গোছানো বাকি।

আমাদের শখের জামা-কাপড়

আমাদের ঘরবাড়িগুলো যে জিনিসটার কারণে সবচেয়ে বেশি এলোমেলো দেখায় সেটা হলো আমাদের কাপড়-চোপড়। এই জিনিসটার ক্ষেত্রে আমরা খুব কম মানুষই আছি যারা বিশ্বাস করি, “অপচয়কারী শয়তানের ভাই”[2]

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে আমরা কুরআনের আয়াত বিশ্বাস করলেও, কাপড়-চোপড়ের ক্ষেত্রে এই আয়াত বিশ্বাস করা আমাদের খুবই কঠিন হয়ে যায়।

দরজার হুকে দেখা গেল আপনার কাপড়, বারান্দায় দড়িতে আপনার কাপড়, হ্যাঙ্গারে আপনার কাপড়, আলমারিতে আপনার কাপড়, ওয়ারড্রোবে আপনার কাপড়, বেডরুমে চেয়ারের ওপর আপনার কাপড়, পড়ার টেবিলের ওপরেও আপনার কাপড়, সব জায়গায় শুধু আপনি আর আপনি!

এই কাপড়গুলোর মধ্য থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বেছে বের করতে পারলেই আপনার ঘরের বড় একটা অংশ decluttered হয়ে যাবে।

এ ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হলো, আপনার যাবতীয় যত রকমের কাপড়-চোপড় আছে সবকিছুকে এক জায়গায় জড়ো করা। এরপর প্রত্যেকটা কাপড় ধরে ধরে হিসাব করা যে, এই কাপড়টা আমি রাখব নাকি রাখব না? কাপড়টা কি এখনো আমার গায়ে হয় নাকি হয় না? এই কাপড়টা কি আমার পরতে ভালো লাগে নাকি লাগে না? এই কাপড়টা কি বেশি মলিন হয়ে গেছে নাকি এখনো ঠিক আছে? আমি কি এই কাপড়টা গত বছর একবারও পরেছিলাম বা আগামী কত বছরের মধ্যে আবার পরব?

প্রত্যেকটা কাপড় এক এক করে ধরে প্রশ্নগুলো করে সিদ্ধান্ত নিন, আপনি কাপড়গুলো রাখবেন নাকি রাখবেন না? সেল করে দেবেন নাকি কাউকে দান করে দেবেন?

দান করে দিলে তো মাশাআল্লাহ, আপনার একটা অপ্রয়োজনীয় জিনিস দ্বারা আরেকজনের বড় একটা প্রয়োজন পুরা হয়ে গেল। অনেক সময় দিতে চাইলেও দেখা যাচ্ছে, দেওয়ার মতো সুযোগ বা মানুষ পাওয়া যায় না। তাহলে আপনি ভালো করে প্যাকেট করে ময়লাওয়ালাদের কাছেও দিয়ে দিতে পারেন। ওরা কাপড়-চোপড়গুলোকে আলাদা করে রেখে পরে কম দামে বিক্রি করে দেয়। যেসব জায়গায় পুরাতন কাপড় কেনাবেচা হয়, যাদের দরকার আছে তারা সেসব জায়গা থেকে কিনে নিতে পারে।

আর যদি আপনাকেই সেল করে দিতে হয়, তাহলে বেশি দাম চেয়ে বেশিক্ষণ মার্কেটপ্লেসে ঝুলিয়ে না রাখাই ভালো। এটা আপনার সময় নষ্ট করবে। কিছুটা কম দামে দিলেন, তাড়াতাড়ি সেল হয়ে গেল; আর আপনি দ্রুত clutter-free হয়ে আপনার নিজ কাজে মন দিতে পারলেন।

অপ্রয়োজনীয় কাপড়গুলো বাদ দিয়ে দেওয়া হলো, এখন প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড়গুলো গুছিয়ে রাখার পালা। এই কাজটা আপনি কীভাবে করবেন?

আমাদের সকল কাপড়-চোপড়ের মধ্যে বেশ কয়েকটা ক্যাটাগরি আছে। কিছু কাপড় আছে আমরা নিত্যদিন ব্যবহার করি, কিছু কিছু কাপড় আছে যেগুলো সপ্তাহে, কিছু আছে গ্রীষ্মকালে বা শীতকালে ব্যবহারের জন্য। শীতকালে বা গ্রীষ্মকালের কাপড় নিশ্চয়ই আমি একেবারে হাতের নাগালে রাখব না। যেমন : আমার গোসল, কাপড়-চোপড় ধোয়া ও কাপড় শুকানোর জায়গার কাছাকাছি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাপড়গুলো রাখতে পারি। র‍্যান্ডম খোলা হয় না এ রকম জায়গায় বেডশিট, পর্দা, পিলো কভার রাখতে পারি; এগুলো তো প্রতিদিন লাগে না।

নিজের প্রয়োজন আর ব্যবহারের চাহিদার ভিত্তিতে কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাখলে প্রতিদিন পাঁচ মিনিট হলেও সময় বাঁচে। সপ্তাহ শেষে, বছর শেষে এই পাঁচ মিনিটই একটা বিরাটাকার ধারণ করে। আপনি যদি সেকেন্ডের হিসাবে গাফিলতি করেন, ঘণ্টার হিসাবেও গাফিলতি করবেন, এটাই স্বাভাবিক।

এই এক মিনিটই তো, কতই-বা সেইভ হবে—এভাবে ভেবেছেন তো, সময় হারানোর গোলকধাঁধায় পড়ে যাবেন। সময় হারিয়ে যাওয়ার পক্ষে তখন যুক্তি খুঁজতে থাকবেন, “শেষ জামানায় সময়ের বরকত উঠে যাবে”। এই তো আপনি সহজে মিলিয়ে ফেললেন, এ জন্যই তো আপনার সময়ে কোনো বরকত নেই।

শেষ জামানায় অনেক খারাপ কিছুই ঘটবে। সমস্ত খারাপ কিছুকেই নিজের জীবনে এক্সপেরিয়েন্স করার দরকার কী? আপনি এক্সপেরিয়েন্স করলেও এটা শেষ জামানা, না করলেও এটা শেষ জামানা; যেহেতু আমাদের নবীজির আগমন ঘটে গেছে। শেষ জামানা এসে গেছে—এটাকে প্রমাণ করার জন্য নিজের সময়ের বরকতহীনতাকে এত পালিশ করে সকলের সামনে আনার তো দরকার নেই!

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সতর্ক করেছেন, এ সময়ে আমরা এতটা অসচেতন হয়ে যাব যে, সময় কোন দিক দিয়ে চলে যাবে টেরও পাব না। আমরা সতর্ক হই, এক মুহূর্ত সময়েরও কদর করা শুরু করি। ইনশাআল্লাহ, জীবনে আল্লাহ তাআলা ভরপুর বারাকাহ দিয়ে দেবেন।

সময় নিয়ে এত কথা কেন বলছি? কারণ হলো, যারা নিজেদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, কাপড়-চোপড়, ঘরবাড়ি এলোমেলো-অবিন্যস্ত রেখে দেয়, তাদের বড় একটা অজুহাত হলো “সময় নেই”।

সময় নেই তাই গুছাতে পারি না, আর গুছিয়ে রাখি না বলে সময়ে বরকত হয় না। অনেকটা “ডিম আগে, না মুরগি আগে”-র মতো!

দেখুন বেহনো, আমরা এই দৌড়ঝাঁপের সময়ে চলতে পারব বলেই আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শেষ জামানায় পাঠিয়েছেন; মুসা আ.-এর কওম বানিয়ে তো আমাদেরকে পাঠাননি। আল্লাহ তাআলা কারও ওপর মাত্রাতিরিক্ত বোঝা চাপান না।

যাইহোক, যা বলছিলাম, নিজের পছন্দের কাপড়-চোপড়গুলো দয়া করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখবেন। সময়ের অজুহাত না দিয়ে বরং রুচিশীলতাকে সামনে রাখতে পারেন।

বাচ্চারা এত এলোমেলো করে, কী করব?

ধরুন, আপনি খুবই অর্গানাইজড, কিন্তু আপনার বাচ্চাকাচ্চা আছে এবং তারা খুবই এলোমেলো করে। গুছিয়ে রাখা ব্যাপারটা যে কী, তা তারা বুঝতেই চায় না। আপনি একদিক থেকে গুছাতে থাকেন, ওরা আরেকদিক থেকে এলোমেলো করতে থাকে। আমাদের ঘরগুলোতে হয় না এমন?

কী করবেন তখন? ঘরদোর গুছিয়ে পরিষ্কার রাখতেও ইচ্ছা করে, আবার বাচ্চাকাচ্চা ওদের খেলনা নিয়ে খেলুক, হাসিখুশি থাকুক, ঘরের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করুক—এটা দেখতেও ইচ্ছা করে। তাই না? একজন বাচ্চার মা হিসেবে আমি জানি, বাচ্চার মায়েরা আমার সাথে একমত হবেন।

এখন ওরা যদি ছোট থেকেই অল্পস্বল্প দায়িত্ব নিয়ে বড় হয় বা বাড়তি কাজ করতে করতে মায়ের কষ্টটা সামান্যতমও আন্দাজ করতে পারে, তাহলে মায়েদের জন্য কিছুটা হলেও সহজ হয়। আমরা মায়েরা তো শুধু এক-দুই বছরের বাচ্চার tantrum সামলাই না, সাত-আট বছরের বাচ্চারও tantrum সামলাই। দায়িত্ববোধের ছিটেফোঁটাও না শিখিয়ে কতদিন আমরা ওদেরকে মেহমানের মতো পালব?

আরেকটা বিষয় হলো, বাচ্চাদের এলোমেলো করার ক্ষেত্রে সবকিছুতে ছাড় দিয়ে দেওয়া, আপনার দৃষ্টিতে এটা কেমন?

আমরা কি ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে স্বেচ্ছাচারিতা বা যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারার নেশাকে যত্ন-আত্তি করে বাড়িয়ে তুলছি? শুধু নাফসানিয়াত আর নাফসানিয়াত। যা বলছে তা-ই করতে দিচ্ছি, যা পেতে জিদ করছে সেটাই এনে দিচ্ছি। এই বাচ্চার বড় হয়ে নফস কন্ট্রোল করতে কি পরিমাণ কষ্টই-না হবে, আল্লাহু আ’লাম।

এলোমেলো করার ক্ষেত্রে বা খেলাধুলার ক্ষেত্রে ভারসাম্য অনুশীলন ছোটবেলা থেকেই করা দরকার।কিন্তু এসব কথা কেন বললাম? এর সাথে ডিক্লাটারিংয়ের সম্পর্ক কোথায়?

আপনি যদি বাচ্চার ক্ষেত্রে ব্যাপক নাফসানিয়াত, স্বেচ্ছাচারিতা আর ভারসাম্যহীনতা অনুশীলন করেন, তবে বাচ্চাকাচ্চার জিনিসে ডিক্লাটারিংয়ের প্রয়োগ আপনি করতে পারবেন না।

বাচ্চাদের নতুন জিনিস কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখা দরকার, এটা আসলেই প্রয়োজন কি না। সঠিকভাবে না ঠকে জিনিসপত্র কেনা এক যুদ্ধ, সে জিনিস ঘরে আনার পর ঠিকঠাক করে রাখা আরেক যুদ্ধ।

ধরুন, আপনি নতুন জিনিস কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে গেলেন, কিন্তু অলরেডি অনেক কিছু কেনা আছে। এসব খেলনার ডিক্লাটারিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি বাচ্চার সাথে একটা নেগোশিয়েশনে যেতে পারেন। ওদেরকে বলতে পারেন, তোমার অমুক অমুক খেলনাগুলো আমরা বিক্রি করে দিই আর এই টাকা দিয়ে তোমাকে তোমার প্রয়োজনীয় ওই জিনিসটা কিনে দিই।

অথবা শেখাতে পারি, আরেকজনকে খেলনা দান করার আনন্দ। খেলনা নিয়ে নিজে খেলার মধ্যে একটা আনন্দ আছে আর দান করার পর অন্য কেউ সে খেলনা নিয়ে মজা করে খেলছে, এটা দেখার আরেকটা আনন্দ আছে। ফ্রি-টাইমে গল্পগুজবের মাধ্যমে এই আনন্দটাও ওদের মনের মধ্যে এঁকে দিতে পারি।

ছোটবেলা থেকে ওদের মনের মধ্যে ডিক্লাটারিংয়ের বিষয়টা গেঁথে গেল।

রান্নাঘরে Decluttering

ঘরের সকলের জাগতিক এনার্জির সেন্টার হলো রান্নাঘর।

বাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। বাংলার মায়েদের সারা দিনের বড় একটা অংশ কাটে এ জায়গায়। গৃহকর্ত্রী যে যার মতো ভালোবেসে আগলে রাখে এ জায়গাটাকে। আমাদের সুস্বাস্থ্য, ভালো থাকা, বাচ্চাকাচ্চার পুষ্টি, বিকাশ, সুসম্পর্ক, এমনকি আতিথেয়তা বা মেহমানদারীর রসদও আসে এই ছোট ঘরটা থেকেই। কিন্তু সবচেয়ে ভয়ংকর জিনিসগুলোর ঘনঘটা এখানেই। ছুরি, কাঁচি, বটি, আগুন, পানি, ময়লা, ব্যাকটেরিয়া, ইনফেকশন ইত্যাদি বিপজ্জনক জিনিসগুলোর সবই আপনি এখানে পাবেন। এ ছাড়া আরও একটি বিষয় হচ্ছে, প্রতিনিয়ত এই জায়গাটা ময়লা হয়। রান্না করলেই ময়লা হয়ে যায়, তেল চিটচিটে হয়ে যায়। এলোমেলো-অগোছালো হয়ে যায়। মাছ-গোশত কাটাকাটির সময় তো কথাই নেই। আর যে ঘরে বাচ্চা আছে, সে ঘরে তো সারা দিন চুলা অলমোস্ট জ্বলতেই থাকে। এতকিছুর পরও যারা এই রান্নার ঘরটাকে পরিষ্কার-টিপটপ রাখতে পারে, আসলেই তারা বাহবা পাওয়ার যোগ্য। কোথায় যেন পড়েছিলাম, সফল মানুষদের একটা বৈশিষ্ট্য হলো, তারা ঘুমানোর আগে রান্নাঘর পরিষ্কার করে রেখে তারপর ঘুমাতে যায়। অর্থাৎ এটা অনেকটা এমন যে, আগের দিনের যাবতীয় কাজগুলোকে কমপ্লিট করে তারপর ঘুমাতে যায়।

রান্নাঘরটাকে যে যার মতো পছন্দ অনুযায়ী গুছিয়ে রাখতে পারে। যেগুলো প্রয়োজন হয় প্রতিনিয়ত, সেগুলোই সামনে থাকল। যাবতীয় সব হাঁড়ি-পাতিল তো সামনে রাখার দরকার নেই। জিনিসপত্র কম থাকলে পোকামাকড় কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখন আসলে পরিষ্কার করাটাও একটু সহজ হয়।

সবার কিচেনের স্টাইল এক রকম না। যে যার সীমার মধ্যে থেকে তার রান্নার জায়গাটাকে গুছিয়ে রাখতেই পারে। অনেক নামিদামি জিনিসপত্র থাকতে হবে জরুরি না। রান্নাঘরটা যে একেবারে ড্রয়িংরুম বানিয়ে ফেলতে হবে, সেটাও জরুরি না। জরুরি হলো, ময়লা হলেই সাথে সাথে সেটা পরিষ্কার করে ফেলা এবং অপ্রয়োজনীয় কোনো জিনিস না রাখা। আর যেগুলো আছে সেগুলোকে নিজের রুচি অনুযায়ী গুছিয়ে রাখা।

রান্নাঘরের ডিক্লাটারিং নিয়ে তিনটা প্রশ্ন করি,

-- আপনি যে কেনাকাটা করেন, এটা কি পাইকারি রেটে করেন নাকি খুচরা?

-- আপনার ঘরে কি আলাদা স্টোররুম আছে?

-- রান্নাঘর কিংবা রেফ্রিজারেটরে কোনো জিনিস মাসের পর মাস পড়ে থাকছে কি?

প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তাহলে আরেকবার সময় করে আপনার রান্নাঘরের জীবনযাত্রা নিয়ে চিন্তা করা দরকার। ছোট করে বলতে চাই, কিচেন, স্টোররুম বা রেফ্রিজারেটরে জিনিসপত্র কম কম থাকলে পোকামাকড় কম হয়, মেইন্টেইনেন্সের ঝামেলা কমে, সময় বাঁচে। এক মাসের বেশি সময়ের জন্য খাবার সংরক্ষণ করে রাখা ঠিক না। খাবারের প্রাচুর্য খাবারে রুচিহীনতা তৈরি করে। তা ছাড়া এতে খাবারের টাটকা ভাবটা চলে যায়।

সত্যি বলতে, যত ক্লাটার তত বিভ্রান্তি।