Decluttering - এর সবচেয়ে সহজ কৌশল (Part-4)

SKILLS

8/16/20251 min read

Decluttering - এর সবচেয়ে সহজ কৌশল

আমরা যদি সত্যিকারের দানশীল হয়ে যাই, তবে এক তুড়িতে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। দানশীলতা নিয়ে কয়েকটা হাদীস উল্লেখ করা হলো। এগুলো আপনারা সকলেই জানেন। তারপরও উল্লেখ করা হলো।

সূরা মাআরিজের মধ্যে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমাদেরকে লঘুচিত্তের অধিকারী করে তৈরি করা হয়েছে। তাই আমরা দ্রুত সবকিছু ভুলে যাব এবং এটাই বাস্তব। ভুলে যাওয়াটা দোষের কিছু না, কিন্তু মুযাকারা না করাটা দোষের। শুধু মুযাকারার উদ্দেশ্যে হাদীসগুলো নিয়ে আলোচনা করা।

হযরত মিকদাদ রাযি. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘মানুষের অন্তর খুবই পরিবর্তনশীল। চুলার ওপর ফুটন্ত গরম পানি ঠান্ডা হতে যে সময়ের প্রয়োজন, মানুষের অন্তর পরিবর্তন হতে ততটুকু সময়ও লাগে না।’

তাই আসুন, আমরা কিছুক্ষণ কুরআন-হাদীসের নূর নিই।

--- আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তোমরা দান প্রকাশ্যে করো, তবে তা উত্তম; আর যদি তা গোপনে করো এবং অভাবীদের দাও, তবে তা তোমাদের জন্য শ্রেয়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের মন্দগুলো মোচন করে দেবেন। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা অবগত আছেন।’

--- ‘হে বনী আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও, পান করো এবং অপব্যয় কোরো না। তিনি অপব্যয়ীদের পছন্দ করেন না।’

--- হযরত হাকীম ইবনে হিযাম রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

أَفْضَلُ الصّدَقَةِ - أَوْ خَيْرُ الصّدَقَةِ - عَنْ ظَهْرِ غِنًى وَالْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ مِنَ الْيَدِ السّفْلَى وَابْدَأْ بِمَنْ تَعُولُ.

‘সর্বোত্তম সাদাকা সেটাই, যা নিজের সচ্ছলতা বজায় রেখে করা হয়। দাতার হাত গ্রহীতার হাতের তুলনায় উত্তম। আর (যখন অর্থ ব্যয় করবে তখন) তোমার পোষ্য ও অধীনস্থদের দিয়ে শুরু করবে।’

--- হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদীস, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন সাদাকায় সবচেয়ে বেশি সওয়াব হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিয়েছেন,

أَنْ تَصَدّقَ وَأَنْتَ صَحِيحٌ شَحِيحٌ تَخْشَى الْفَقْرَ وَتَأْمُلُ الْغِنَى، وَلاَ تُمْهِلْ حَتّى إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ قُلْتَ لِفُلاَنٍ كَذَا وَلِفُلاَنٍ كَذَا أَلاَ وَقَدْ كَانَ لِفُلاَنٍ.

‘যখন তুমি সুস্থ-সবল, তোমার উপার্জিত সম্পদ তুমি তোমার নিজের কাছে রেখে দিতে চাচ্ছ, অভাবে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তোমার রয়েছে, তুমি সচ্ছলতার স্বপ্নও দেখো—এমন পরিস্থিতিতে তুমি যে দান করবে (সেটাই তোমার জন্য অধিক প্রতিদান বয়ে আনবে)। (দান-সাদাকার ক্ষেত্রে) তুমি এতটা বিলম্ব কোরো না যে, তোমার প্রাণ ওষ্ঠাগত হলো আর তখন তুমি বলতে থাকলে, এটা অমুকের, এটা তমুকের। শুনো, এটা তো তখন অন্যদেরই হয়ে যায়।’

---পবিত্র কুরআনের ঘোষণা,

اَلشَّیْطٰنُ یَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَ یَاْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَآءِ.

‘শয়তান তোমাদেরকে দরিদ্রতার ভয় দেখায় আর তোমাদেরকে মন্দ কাজের (কৃপণতার) আদেশ করে।’

--- রোজ হাশরে যখন সূর্য থাকবে খুব কাছাকাছি, তাপে আর তৃষ্ণায় মানুষ থাকবে অস্থির, হাদীসের ভাষ্যানুসারে কঠিন সে মুহূর্তে সাত শ্রেণির লোককে আল্লাহ তাআলা নিজ ছায়ায় স্থান দেবেন। তাদের অন্যতম,

رَجُلٌ تَصَدّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ.

‘এমন ব্যক্তি, যে এতটাই গোপনে দান করে, তার ডান হাতের দান বাম হাতও জানতে পারে না।’

সবশেষে বলতে চাই, চারিদিকে প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিশৃঙ্খল ঘনঘটা থাকবে না, যদি আমাদের মাঝে থাকে দানশীলতা। এই গুণটার কারণে শুধু Velocity of Money-ই বাড়ে না, Velocity of Good Luck-ও বেড়ে যায়। সবশেষে, এই আয়াতটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চ্যাপ্টার সম্পন্ন করছি। ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ।

সাহাবায়ে কেরাম প্রায় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করতেন, তাঁরা কোন সম্পদ দান করবেন। এ প্রশ্নটি উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিয়েছেন,

‘আপনি বলে দিন, যা (তোমাদের প্রয়োজনের) অতিরিক্ত।’